ক্যাসিনো: মসজিদের শহরে ইসলাম ধ্বংসের পরিকল্পনা?

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান, আর তাই এদেশের রাজধানী বিশ্বে মসজিদের শহর বলে পরিচিত ছিল। ইসলাম বিরোধী আওয়ামী লীগ সরকার এই শহরকে এখন ক্যাসিনোর শহরে পরিণত করেছে।

ইসলাম ধ্বংসের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই ঢাকাকে আওয়ামী লীগ ক্যাসিনোর শহরে পরিণত করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র এই নেতা।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই ইসলাম বিরোধী। তারা কখনোই ইসলামের নাম পর্যন্ত সহ্য করতে পারে না। এরই অংশ হিসেবে তারা মসজিদের শহরে ইসলাম ধ্বংসের নীল নকশা বাস্তবায়নে মেতে উঠেছে।

তবে যুবলীগ নেতাদের ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান অভিযান এবং যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান বিএনপির রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়সের দিক থেকে বলতে গেলে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন। এই বয়সে মানুষের ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু থাকে না। সেই হিসেবে তিনি যদি ইসলাম ধ্বংসের বিরুদ্ধে দাঁড়ান সেটা অবশ্যই প্রশংসার। একইসঙ্গে তিনি প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন বলেও আমি আশা করি।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান-২ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে নেয়া হয়।

এর আগে রাজধানীর মতিঝিলের ফকিরাপুল এলাকায় তার মালিকাধীন ‘ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল’ ক্লাবের ক্যাসিনোতে র‌্যাব অভিযান চালায়। এসময় ক্যাসিনো থেকে ১৪২ জনকে আটকসহ বিপুল পরিমাণ টাকা জব্দ করেছে র‌্যাব।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, ওই অভিযানে তার কাছ থেকে ১টি অবৈধ অস্ত্র, গুলি ও ৪শ’ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গের কারণে আরও দু’টি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।

যে বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই ফ্ল্যাটের ম্যানেজার আরিফ হোসেন জানান, গত ৪ বছর আগে খালেদ মাহমুদ ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেন। তিনি এখানে শ্বশুর-শাশুড়ি, স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ থাকতেন। বুধবার বিকেল তিনটার দিকে ডিবি পরিচয়ে সাদা পোশাকে চার-পাঁচজন বাসায় ঢোকেন। চারতলার এ-৩ ফ্ল্যাটে যান তারা। এর প্রায় এক ঘণ্টা পরে পোশাকে র‌্যাব সদস্যরা বাসা ঘিরে ফেলেন।

শফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, খালেদ মাহমুদের বাসায় তল্লাশি চালানোর সময় লোহার লকার থেকে ১০ লাখ টাকা ও ৫-৬ লাখ টাকার সমপরিমান ডলার, ১টি অবৈধ অস্ত্র, গুলি ও ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

পরবর্তীতে বুধবার গভীর রাতে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের উল্টো দিকে ইস্টার্ন কমলাপুর টাওয়ারে খালেদের এই টর্চার সেলের সন্ধান পায় র‌্যাব-৩ এর একটি দল।

র‌্যাব জানায়, কোনো ব্যবসায়ী বা অন্য কেউ চাঁদা দিতে না করলেই ওই টর্চার সেলে নিয়ে তাদের নির্মম নির্যাতন করা হতো।

র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কেউ চাঁদা দিতে না করলেই টর্চার সেলে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হতো। উচ্চ মাত্রায় সুদসহ পাওনা টাকা আদায়সহ সব ধরনের কাজে ব্যবহার করা হতো এই টর্চার সেল। টর্চার সেলে নির্যাতনের অনেক ধরনের যন্ত্রপাতি রয়েছে।

তিনি বলেন, খালেদের টর্চার সেলে অভিযান চলমান রয়েছে। এখানে যা দেখছি লোম শিউরে ওঠার মতো অবস্থা।