জন্মদিনে নায়ক ফারুক হাসপাতালে ভর্তি

করোনাভাইরাস উপসর্গ জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে নায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তির আগে তিনি করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করান। ফলাফল নেগেটিভ আসে। তিনি এখন সুস্থ আছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার সানাউল করিম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সানাউল করিম বলেন, ‘গত রোববার চিত্রনায়ক ফারুক জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মূলত করোনার উপসর্গে ভুগছিলেন তিনি। সেজন্য আতঙ্কিত হয়ে তিনি হাসপাতালে আসেন। ভর্তির আগে ফারুক নিজেই করোনার নমুনা পরীক্ষা করান। সেখানে ফলাফল নেগেটিভ আসে।’

ইউনাইটেড হাসপাতালের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘নায়ক ফারুক এখন মোটামুটি সুস্থ আছেন। হালকা একটু জ্বর ছিল, কিন্তু এখন আর নেই। চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক তাঁর খোঁজখবর নিচ্ছেন। তিনি হাসপাতালের ৫১৭ নম্বর ভিআইপি কেবিনে আছেন। মূলত তিনি বিশ্রামে আছেন। শারীরিক অবস্থা ও মনোবল চাঙ্গা হলে তিনি হাসপাতাল ছাড়বেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’

১৮ আগস্ট ছিল এই খ্যাতিমান অভিনেতার জন্মদিন। এ উপলক্ষে অনেক ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষী তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পর থেকে তিনি জন্মদিন নিয়ে কোনো আয়োজন করেন না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর থেকেই তিনি জন্মদিন উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা বাদ দেন।

নায়ক ফারুক একাধারে চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও ব্যবসায়ী। ফারুক ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন। প্রথম ছবিতে তিনি কবরীর সঙ্গে জুটি বাঁধেন। এরপর তিনি ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ দুটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৭৫ সালে গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ নামের দুটি ব্যবসাসফল ও আলোচিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং সে বছর লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় ফারুক অভিনীত তিনটি ছায়াছবি ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’ ও ‘নয়নমণি’। চলচ্চিত্র তিনটি বিভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। পরের বছর শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত কালজয়ী উপন্যাস ‘সারেং বৌ’ অবলম্বনে নির্মিত ‘সারেং বৌ’ ও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র দুটি নারীকেন্দ্রিক হলেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়।

১৯৭৯ সালে ফারুক অভিনীত ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোট মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’ চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসাসফল হয়। ১৯৮০ সালে ‘সখী তুমি কার’ ছায়াছবিতে শাবানার বিপরীতে শহুরে ধনী যুবকের চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসা পান। ১৯৮৭ সালে ‘মিয়া ভাই’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে মিয়া ভাই হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।