তোফায়েল আহমেদের পরিবার এমন প্রতিদান পেতে পারে না

তোফায়েল আহমেদের সন্তান হিসেবে গর্ব করতে গিয়ে পারিবারিক সূত্রের রাজনীতির প্রসঙ্গক্রমে কথা বলায় বাগেরহাটে ছবিতে জুতাপেটা ও ঝাড়ুপেটার শিকার হয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি তোফায়েল আহমেদের পালকপুত্র ও ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব।

এ ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এ ঘটনার সাথে বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এই অংশটি শেখ হেলালের সন্তান সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের অনুসারী।

বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান কখনোই অস্বীকার করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু পঁচাত্তরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যরা দেশের মানুষকে নিয়ে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে হাঁটছেন। একইভাবে এদেশের ইতিহাস থেকে ঊনসত্তর এবং একাত্তরের অন্যতম কিংবদন্তি তোফায়েল আহমেদের নামও মুছে ফেলা যাবে না। বাঙালিকে স্বাধীন দেশ উপহার দেওয়া এবং পুনর্গঠনে তার অবদান কি কেউ অস্বীকার করতে পারবে? পারবে না।

সেই তোফায়েল আহমেদের সন্তান হিসেবে গর্ব করার পরিপ্রেক্ষিতে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের ছবি এভাবে অপমানিত করা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষ এ কর্মকাণ্ড করলেও তবুও মেনে নেওয়া যেত। খোদ তোফায়েল আহমেদের যৌবনের সংগঠন ছাত্রলীগ বাগেরহাট শাখা এহেন হীন কর্মের সাথে জড়িয়ে গেছে!

এটা স্বীকার করতেই হবে যে, ব্যক্তি মইনুল হোসেন বিপ্লব অথবা কেউই সমালোচনার উর্ধ্বে নন। আমরাও পারিবারিক উত্তরাধিকারের রাজনীতির বিরোধী। মইনুল হোসেন বিপ্লবের বক্তব্য যে কেউ সমর্থন নাও করতে পারেন। তাই বলে তোফায়েল আহমেদের সন্তান হিসেবে গর্ব করে তিনি এমন হেনস্তার শিকার হতে পারেন না। শেখ হেলাল এবং শেখ তন্ময়কে এর বিহীত করতেই হবে। কেননা তোফায়েল আহমেদের সম্মানের সাথে ভোলার এবং বাংলাদেশের মানুষের সম্মান জড়িত।

আমরা মনে করি, বাগেরহাটে অতি উৎসাহীদের দ্বারা জননেতা তোফায়েল আহমেদ হেনস্তার শিকার হয়েছেন, ভোলা জেলা এবং দেশের অধিকাংশ মানুষ হেনস্তার শিকার হয়েছেন। কারণ, এখানে কিংবদন্তি তোফায়েল আহমেদের সম্মান জড়িত, ব্যক্তি মইনুল হোসেন বিপ্লব এখানে বিবেচ্য নয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে শেখ হেলাল এবং শেখ তন্ময় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন বলে আমরা আশা করি। এর ব্যাত্যয় হলে জননেতা তোফায়েল আহমেদকে আমরা রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা স্বাধীন দেশ উপহার দেওয়ার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করার পরও তিনি এবং তার পরিবার এতটা ধৃষ্টতামূলক অপমান পেতে পারেন না।