লালমোহনে থেরাপির নামে দেহ ব্যবসা, ‘তাঁতী লীগ’ নেএী আটক

লালমোহন প্রতিনিধি: লালমোহন ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের তালতলা গ্রামে মোছা: শাহিনুর বেগম দীর্ঘদিন থেরাপী ব্যবসার আড়ালে নিজের বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় লালমোহনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহিদুল ইসলাম থানা পুলিশসহ ওই বাসায় অভিযান চালান। এসময় বাসায় এক তরুনীকে পাওয়া যায় এবং ঘরের আশেপাশে ব্যবহৃত কনডম পাওয়া যায়।

লালমোহন ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড চৌকিদার বাড়ির পাশে নবনির্মিত একটি ভবনে দীর্ঘদিন ধরে এমন কর্মকাণ্ড চলছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

স্থানীয়রা বলছেন, শাহিনুরের স্বামী শাহে আলম ঢাকায় ভ্যান গাড়ি চালায়। তা সত্ত্বেও বাড়িতে শাহিনুর একতলা ছাদ দিয়ে পাকা ভবন নির্মাণ করে। বাসায় নতুন ফ্রিজ, সোফাসহ দামী আসবাবপত্রও রয়েছে।

স্থানীয় নারী-পুরুষসহ একাধিক প্রতিবেশী জানান, ওই ভবনে থেরাপী ব্যবসার আড়ালে তার মূল কর্মকাণ্ড বিভিন্ন অপরিচিত মেয়েদের এনে অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা। তার বাড়িতে প্রতিদিনই মোটরসাইকেল নিয়ে অপরিচিত লোকদের আনাগোনা চোখে পড়ে আশপাশের লোকজনের। এ নিয়ে পার্শ্ববর্তী লোকজন শাহিনুরকে কিছু বললে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার কারণে শাহিনুরের কর্মকাণ্ড নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা তৈরি হয়।

শাহিনুরের বাসায় পাওয়া তরুণীর নাম ফারজানা আক্তার মিতু। তার বাবা মা ঢাকা থাকে বলে সে জানায়।
শাহিনুরের বাসায় তার ভিজিটিং কার্ড পাওয়া গেছে। যাতে শাহিনুরের পরিচয় ভোলা জেলা তাঁতী লীগের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। তাদের আটক করে আনার সময় শাহিনুরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এলাকাবাসী মিছিলও করে।

শাহিনূরের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে গত ২৪ আগষ্ট ফৌজদারী একটি মামলাসহ বিভিন্ন সময় নারী ও শিশুসহ মোট ৭ টি মামলার আসামী করা হয়েছে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সফিজল হককে।

সফিজল হক জানান, গ্রাম পুলিশ হিসেবে এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় আমাকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়েছে। আমি শাহিনূরের কঠিন বিচারের দাবী জানাই।

তবে শাহিনুর বেগম জানান, বাসায় কোন অসামাজিক কার্যকলাপ চলে না। এখানে ভাণ্ডারির আয়োজন হয়। এছাড়াও লোকজনকে থেরাপী দেয়া হয় যার কারণে বিভিন্ন লোকজন এ বাসায় আসে। বাসায় থাকা তরুণী তার বোনের মেয়ে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ বা প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টে সাজা দেয়া যায়নি।

লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, এখনও শাহিনুর ও মিতু থানা হেফাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।