লালমোহনে প্রধানমন্ত্রীর উপহার কম্বল বিতরণকে বিতর্কিত করার অভিযোগ

চলমান শৈত্যপ্রবাহে ভোলার লালমোহনের অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের জন্য পাঠানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের কম্বল বিতরণকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বিবিএস ক্যাবলসের চেয়ারম্যান আবু নোমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে।

গত ১০ জানুয়ারি লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ২ নাম্বার ওয়ার্ড হাজিরহাট বাজারে কম্বল বিতরণকে আবু নোমান হাওলাদারের বিবিএস বাংলা অনলাইন পোর্টালে বিতর্কিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এমন অভিযোগ করে ধলীগৌরনগর ইউনিয়ন (উত্তর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, আমার এলাকায় বিতরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাঁচশত কম্বল দেয়া হয়। ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন মহোদয় বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করার পর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কম্বলগুলো বিতরণ করি। তবে, আবু নোমান হাওলাদারের বিবিএস বাংলা অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিউজে বলা হয়েছে, ৯ তারিখ সন্ধ্যায় হাজিরহাটে কম্বল বিতরণকালে হট্টগোল হয় এবং ৫/৭শত কম্বলের কথা বলে ১৫০টি কম্বল দেয়ায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। কম্বল বিতরণকে আরও বিতর্কিত করতে সাফিয়া বেগম নামে এক মহিলার ভিডিও বক্তব্য ফেসবুকে পোস্ট করেছে আবু নোমান হাওলাদারের লোকজন।

এদিকে ওই ভিডিও বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সাফিয়া বেগম সাংবাদিকদের কে বলেন, হাজিরহাট বাজারে কম্বল বিতরণ উদ্বোধন করে চলে যান ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। পরে স্থানীয় নের্তৃবৃন্দরা কম্বল বিতরণ করেন। এসময় পুরুষ লোকদের জন্য নারীরা সুযোগ না পাওয়ায় সকালে নারীদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হবে বলে জানান বিতরণকারীরা।

সাফিয়া বেগম আরও বলেন, আমিসহ প্রতিবেশী বিলকিস, সাফিয়া খাতুন, পারুলসহ কয়েকজন হাজিরহাট বাজার থেকে ফিরে আসার সময় সুখন ও মমিন নামে দুজন আমাদের কে জোরপূর্বক আবু নোমান হাওলাদারের বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় তারা আমাদের হাতে কম্বল তুলে দেয়। পরে আবু নোমান হাওলাদারের সাথে মোবাইলে কথা বলে ভিডিও তৈরি করতে আমাদেরকে প্রধানমন্ত্রী ও এমপি শাওনের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলে। এনিয়ে তাদের সাথে আমার বারাবাড়িও হয়।

একই অভিযোগ করেন সাফিয়া বেগমের সাথে থাকা বিলকিছ, সাফিয়া খাতুন ও পারুল বেগম। তারা জানান, কম্বল বিতরণ নিয়ে বিতর্কিত কথা বলতে সাফিয়া বেগমকে বারবার চাপ সৃষ্টি করা হয়। এটা আবু নোমান হাওলাদার ও তার লোকজনের কুরুচিপূর্ণ নাটক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যবসায়ী আবু নোমান হাওলাদারের ঘনিষ্ঠজন সুখিন বলেন, আমি ঢাকায়। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তা মিথ্যা।

ব্যবসায়ী আবু নোমান হাওলাদারের অপর ঘনিষ্ঠজন মমিনের কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হন এবং সাংবাদিকরাই ওই নারীদের কে অভিযোগ শিখিয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।

আবু নোমান হাওলাদার বলেন, আমার সাথে ফোনে কারও কথা হয়নি। তবে কম্বল না পাওয়া বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য ফেসবুকে দেখেছি। এ অভিযোগকে মেকিং গেম বলেও অভিহিত করেন আবু নোমান হাওলাদার।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের কম্বল বিতরণ কে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করায় আবু নোমান হাওলাদার ও তার লোকজনের বিচার দাবি করেছেন ধলীগৌরনগর ইউনিয়ন (উত্তর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।