লেফটেন্যান্ট পরিচয়ে দেখা করে ভোলার মেয়েকে অপহরণ-ধর্ষণ

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ভুয়া লেফটেন্যান্ট পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করা মো. আবির হোসেন নামে এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে ভোলা জেলা পুলিশ।

পুলিশ বলছে, তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের প্রথম সারির বিভিন্ন পত্রিকার লোগো ব্যবহার করে নিজের লেফটেন্যান্ট পরিচয়ে ভুয়া নিবন্ধ লিখে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাতেন। এই প্রভাব ব্যবহার করে চাকরি দেওয়ার নামে এক তরুণীকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ভোলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ সরদার এসব তথ্য জানান। গ্রেফতার আবির হোসেন পাবনা জেলার বাসিন্দা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ভোলা সদরের মধ্য চরনোয়াবাদ এলাকার এক নারী ভোলা মডেল থানায় তার মেয়ে (১৮) নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে আমরা নিখোঁজকে উদ্ধারের জন্য কাজ শুরু করি। এরপর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে ওই মেয়ে অপহরণকারীর মোবাইল থেকে কৌশলে তার পরিবারকে ভিডিও কল করে জানায়, তাকে আবির হোসেন নামে এক ভুয়া লেফটেন্যান্ট অপহরণ করে দিনাজপুর জেলার কোতয়ালি থানা এলাকায় একটি রুমে আটকে রেখেছে। এরপর আমরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে দিনাজপুর সদরের পাহাড়পুর নামক স্থান থেকে ওই মেয়েকে উদ্ধার করি। একই সময় আবির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

আবির হোসেনের বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার তথ্য জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আসামি একজন অত্যন্ত প্রতিভাবান পেশাদার অপরাধী ও প্রতারক। ভিকটিমের সঙ্গে মোবাইলে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের পর তার কাছ থেকে ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন। তিনি নিজেকে বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে ওই মেয়ের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এরপর আবির ভোলা এসে মেয়েটিকে দেখা করার জন্য ডাকেন। এরপর সার্কিট হাউজ মোড়ের আগে হিড বাংলাদেশ অফিসের সামনে মেয়েটি গেলে তাকে সহযোগীর সহায়তায় মাইক্রোবাসে তুলে নেন। এরপর চেতনানাশক খাইয়ে তাকে অজ্ঞান করে দিনাজপুর নিয়ে যান। সেখানে একটি রুমে আটকে রেখে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ সরদার আরও বলেন, গ্রেফতার আবির হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ঘটনাসহ একাধিক ঘটনার সঙ্গে তার জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য থেকে আমরা ধারণা করছি, তিনি মানব পাচার চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।