সন্তানকে ফিরে পেতে দীর্ঘ ৭ মাস দ্বারে দ্বারে এক অসহায় মা

লালমোহন প্রতিনিধি: কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে ফিরে পেতে সকলের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অসহায় মোসাম্মৎ হাসিনা। স্থানীয় থানা পুলিশ আদালতসহ বিভিন্ন জায়গায় ছেলের সন্ধানে ঘুরছেন তিনি।

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার সময় লালমোহন প্রেসক্লাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছেলের সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন হাসিনা।

লিখিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে আমার ছেলে রিয়াদুল হক টিটুকে চরফ্যাশন পৌরসভা ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী (তখন চরফ্যাশর পৌরসভার ভোট চলছিল) গিয়াস উদ্দিনের শালা এনজেল ও তার বন্ধু রনি, জাবেদ, শামিম ও আরিফ নির্বাচনের প্রচারণা করার জন্য নিয়ে যায়। ঐ দিন বিকালে আমার ছেলে রিয়াদুল হক টিটু বাড়ীতে না আসলে আমার বড় ছেলে ও স্বামী রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর গিয়াস উদ্দিনের কাছে মোবাইলে ছেলের কথা জানতে চাইলে সে বলল আপনার ছেলে আমার বাসায় আছে। এরপর এনজেলের কাছে ফোন করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। সে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রিয়াদুল হক টিটু নিখোঁজ রয়েছে।

ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় চরফ্যাশন থানায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলা করার জন্য গেলে ওসির পরামর্শে মামলা না করে তিনি জিডি করতে বলেন। জিডি নং-৬৯৪/২১ তারিখ ১৭/০২/২০২১ ইং। পরে জিডির কপি দুলারহাট থানায় জমা দেই। চরফ্যাশন ও দুলারহাট থানা আমার ছেলের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় নিরুপায় হয়ে ২৮ আগস্ট ভোলা জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে গত মামলা দায়ের করি। মামলায় ৬ জনকে আসামী করা হয় এবং এনজেলকে ১নং আসামী করি। আদালতে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামীগণ আমাদেরকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে চলছে। আসামীরা এতই প্রভাবশালী যে তারা প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও পুলিশ তাদেরকে ধরছে না।

মোসাম্মৎ হাসিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আসামীদের ভয়ে আজকে চরফ্যাশন থেকে লালমোহন এসে সংবাদ সম্মেলন করলাম। দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস হয়ে গেলেও আমার ছেলের কোন খবর কেউ দিতে পারেনি। আমার ছেলেকে যদি তারা মেরে ফেলে তাহলে আমার ছেলের মৃত লাশটা অন্তত আমি চাই। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবী জানাচ্ছি, আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেন দ্রুত আমার ছেলের সন্ধান দেন।

এমন অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে চরফ্যাশন ও দুলারহাট থানার ওসির সাথে ভোলা প্রতিদিন এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। চরফ্যাশন থানার ওসি জানান, ফেব্রুয়ারিতে আমাদের থানায় এ সংক্রান্ত অভিযোগ আসার পর আমরা জিডি গ্রহণ করি। এই ঘটনায় কোর্টেও মামলা চলমান রয়েছে। আমরা তদন্ত করে এ ধরনের ঘটনার কোনো অস্তিত্ব পাইনি। সেই রিপোর্ট কোর্টে পাঠিয়েছি।

দুলারহাট থানার ওসি ভোলা প্রতিদিনকে বলেন, এ ঘটনা আসলে চরফ্যাশন থানার। দুলারহাটে ওনাদের বাড়ি বলে আদালত হয়তো এখানে পাঠিয়েছেন। আমরা এমন কোনো মিসিং এর বিষয় পাইনি। কোর্ট উদ্ধার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছেন, আমরা যেহেতু উদ্ধার সংক্রান্ত কিছু পাইনি সেজন্য কোর্টকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।