লালমোহন হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ রেখে পালালো স্বামী

আব্দুর রহমান নোমান: হাসপাতালের বারান্দায় স্ত্রীর মরদেহ ফেলে রেখেই পালিয়ে গেছে স্বামী। শুধু তাই নয়, দাফনের সময় স্ত্রীর মুখ দেখতেও যায়নি স্বামী নামের এই পাষণ্ড। এমনকি ৪ বছরের শিশু সন্তানকেও দেখতে দেয়া হয়নি মৃত মায়ের মুখ।

লালমোহন হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, স্ত্রীর মৃত্যুর পর দাফন-কাফন করার পরিবর্তে ৪ বছরের ছেলেকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে সে।

এ ঘটনায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং পাষণ্ডকে আইনের আওয়তায় নেয়ার দাবি জানিয়েছে নিহতের পরিবার।

জানা গেছে, শুক্রবার ভোরে ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চতলা বাজার এলাকার সামছুদ্দিনের ছেলে মঞ্জু , তার স্ত্রী জান্নাত বেগমকে মারধর করে। পরে মঞ্জু মোবাইল ফোনে জান্নাতের বাবা-মাকে জানায়, জান্নাত বিষ খেয়ে মারা গেছে। এরপর প্রতিবেশিদের সহায়তায় মৃত অবস্থায় জান্নাতকে লালমোহন হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে জান্নাতের মরদেহ হাসপাতালের বারান্দায় রেখেই গা ঢাকা দেয় মঞ্জু। নিহত জান্নাত বেগম পার্শ্ববর্তী কুমারখালী গ্রামে বাসিন্দা আব্দুল করিমের মেয়ে।

জান্নাতের চাচী নাজমা বেগম এবং ফুফু নুরুজাহান বেগম সহ অনেকে জানান, প্রায় ৮ বছর আগে দুই লাখ টাকা যৌতুক পরিশোধের মাধ্যমে জান্নাতকে বিয়ে করে মঞ্জু। এরপর থেকে আরো যৌতুকের দাবীতে দফায় দফায় চলে জান্নাতের উপর নির্যাতন। জান্নাত মারা যাওয়ার একদিন আগেও তাকে শারীরিক নির্যাতন করেছিল মঞ্জু। এই নির্যাতনের কথা জান্নাত তার বাবা-মাকে জানিয়েছিল। কিন্তু মঞ্জুর বিরুদ্ধে তখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

জান্নাতের পরিবারের সদস্যরা আরো জানিয়েছে, মঞ্জু একজন পেশাদার জুয়ারী। জুয়া খেলার টাকার জন্যই জান্নাতকে নির্যাতন করতে সে। বিষয়টি এলাকার সবাই জানে। এ জন্য গত এক বছর আগেও মঞ্জুর বিচার করেছে এলাকাবাসী।

শুক্রবার সকালে জান্নাতের মৃত্যু, দুপুর ভোলা হাসপাতালে ময়না তদন্ত এবং রাতে দাফনের জন্য জান্নাতের লাশ তার বাবার বাড়িতে নেয়া হলেও মৃত স্ত্রীকে দেখতে যায়নি মঞ্জু।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, জান্নাতের মৃত্যুর পর ৪ বছর বয়সী ছেলে মুহিনকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে মঞ্জু পালিয়ে গেলেও গায়ের মোড়লদের সহায়তায় জান্নাতের পিতার বাড়ির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে সে।

লালমোহন থানার ওসি মীর খায়রুল কবীর জানান, এ ব্যপারে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। জান্নাতের ময়না তদন্তের রির্পোট হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।