লালমোহন প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহনে সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবীতে ধর্ষকের বাড়িতে উঠেছে এক রমনী। উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে মৃধা চৌমুহনী এলাকার চাঁছাই বাড়িতে ২ মে সকাল ১০টায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, চাঁছাই বাড়ির মোশাররফ ড্রাইভার ঢাকা থাকে। তার স্ত্রী বাড়িতে থাকে। প্রায় আট বছর আগে এ দম্পতির বিয়ে হয় এবং বিয়ের বছর খানিক পরে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান হয়। খুব সুখেই চলছিল সংসারটি। মোশাররফ ড্রাইভার ঢাকা থাকার সুযোগে একই বাড়ির পাশাপাশি ঘরের সাফু চাঁছাইর ছেলে মাসুদ ওই গৃহবধূকে অসৎ উদ্দেশ্যে উত্যক্ত করতে থাকে। বিভিন্ন সময় অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করতো। মাসুদের বিরুদ্ধে তার পরিবারের কাছে বিচার দেয় ওই গৃহবধূ কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। বরং মাসুদ আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
ওই গৃহবধূকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে মাসুদ এবং কাউকে তা জানালে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। মাসুদের কথামত না চললে বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এতে ওই রমনী ভীত হয়ে পড়ে। মাসুদের প্রভাব বিস্তারে ভয়তে এবং লোকলজ্জার কারণে সে ওই কথা কারো কাছে প্রকাশ করেনি।
আতংকে ওই গৃহবধূ বাধ্য হয়ে মাসুদের কথামত চলতে থাকে। এভাবে জোরপূর্বক সম্পর্ক তৈরি করে মাসুদ গোপনে ওই ঘরে যাতায়াত করতে থাকে। অবৈধ ওঠাবসার ফসল হিসেবে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যার বয়স প্রায় চার মাস। তাদের গোপন সম্পর্ক সমাজে জানাজানি হয়ে যায় এবং এই সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবী করেন মাসুদের কাছে ওই গৃহবধূ।
মাসুদ আজকাল করে নানা টালবাহানা করতে থাকে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার বসাবসি হলেও কোন ফয়সালা হয়নি। অবশেষে ঘটনার দিন ২ মে সকাল ১০টার দিকে সন্তান কোলে নিয়ে ওই গৃহবধূ মাসুদের ঘরে ওঠে।
ওই গৃহবধূ জানান, মাসুদ জোর করে আমার ক্ষতি করেছে। আমাকে বিয়ে করবে বলেছে। এই সন্তানের পিতা সে। এখন মাসুদ আমার সংসার নষ্ট করে দিয়ে ধরা দেয় না। আমি এসবের বিচার চাই। এই মেয়ের পিতৃ পরিচয় চাই। আমাকে বিয়ে করতে হবে। সংসার করতে হবে। আপনি থানায় যাননি কেন? জানতে চাইলে ভুক্তভোগী রমনী বলেন, মাসুদ ও পরিবার যেতে দেয়নি। তারা নাকি সমাজের মানুষ নিয়ে ফয়সালা দিবো। কিন্তু ফয়সালা করে না। সমাজের কয়েকজনে ফয়সালা দিবো কইছে। তাও দেয় না। মাসুদ তাকে মেনে না নিলে সে আত্মহত্যা করবে বলে জানায়।
মাসুদের মা জানান, বাবা আমি আর কি বলবো। বাড়িতে কেউ নেই। কামে কাজে গেছে। এই ঘটনার বিচার চলে।
লালমোহন থানার ডিউটি অফিসার জানান, এই রকম অভিযোগ নিয়ে এখনো থানায় কেউ আসেনি। আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।