করোনা: বাসায় সঙ্গী হতে পারে নামাজ-রোজা-কোরআন

আব্দুর রহমান নোমান: করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। করোনায় একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। আর ইটালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেন মৃত্যুর মিছিল চলছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশেও ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাসায় থাকতে বলা হচ্ছে। বাসায় বসে এতদিন কী করা যায়? আপনার মতো এমন প্রশ্ন এখন অনেকেরই।

গত কয়েকদিন আগেও কেউ ভাবেনি কোলাহলপূর্ণ এই পৃথিবী হঠাৎ ঘরের চার দেয়ালে বন্দী হবে। কিন্তু এখন বিশ্বজুড়ে কারফিউ, জনতার কারফিউ, লকডাউন চলছে। সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের অধিবেশনের পর মুসলমানদের পবিত্র স্থান কাবা ঘর এবং মসজিদে নববীতেও জামাতে নামাজ আদায় সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশেও মসজিদে জুমার নামাজ শুধু ফরজ পড়ার অনুরোধ করা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন জুমার আগে এক বিবৃতিতে মুসল্লিদের বাসা থেকে অযু করে সুন্নত নামাজ পড়ে শুধু ফরজ নামাজ মসজিদে আদায়ের জন্য অনুরোধ করেছে। এমনকি লাইলাতুল মিরাজের নামাজও বাসায় আদায় করার অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

স্বাভাবিক জীবনে আমাদের ব্যস্ততা বহু গুণ। অনেকেই সময় পাই না ঠিকভাবে আল্লাহর ইবাদত করার। যদিও সময় থাকে না বা পাওয়া যায় না এমন নয়। আসলে আমাদের অবহেলার কারণেই ফরজ নামাজ এবং কোরআন তেলাওয়াত ও বুঝে পড়া হয় না। হোম কোয়ারেন্টাইনে এখন যারা আছেন, বা করোনা আতঙ্কে যারা বাসায়; তাদের সবার হাতে এখন বলতে গেলে অফুরন্ত সময়। মোবাইল, ফেসবুক আর ইন্টারনেটে সময় অপচয় না করে এই সুযোগে পাঁচ ওয়াক্তসহ বেশি বেশি নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা যায়। ইচ্ছা করলে কোরআন শরীফ খতমও করা যায় এই অফূরন্ত সময়ে। একইসঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখতে পারলে তো কথাই নেই। কারণ, রোজার পুরস্কার বান্দাকে আল্লাহ নিজ হাতে দেবেন বলে ওয়াদা করেছেন।

করোনা ভাইরাস এমন একটি রোগ, আল্লাহ না করুন এতে যে কেউ যেকোন সময় আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন। ভাইরাস প্রতিরোধে সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়াসহ সব নিয়ম মানার পাশাপাশি এমন বিপদের সময়ে একজন মুসলমানের বেশি বেশি নামাজ, রোজা এবং কোরআনের সংস্পর্শে থাকা ও তওবার কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহ না করুন, এমন ভীতিকর অবস্থায় কেউ যদি মৃত্যুবরণ করেনও, তখন তিনি যদি নামাজ আদায় করা ও রোজা অবস্থায় থাকেন, তাহলে কষ্টের মধ্যেও এরচেয়ে সৌভাগ্যবান আর কে হতে পারে?