করোনা: ভোলা জেলায় মানুষ কতোটা সচেতন?

আব্দুর রহমান নেমান: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে পুরো দেশের মতো দ্বীপজেলা ভোলাও কার্যত লকডাউন। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান, ফার্মেসি, জরুরি পরিষেবা ব্যতীত সব দোকানপাট বন্ধ। মানুষকে বাসায় থাকতে উদ্বুদ্ধ করছে জেলা প্রশাসনহ সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে কতোটা সচেতন?

ভোলা জেলার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে দেখা যায়, সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও সেভাবে সচেতনতা নেই। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষরা দিনশেষে ভিড় করতে চাচ্ছেন স্থানীয় বাজারগুলোতে। তবে নৌবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা জমায়েতের বিষয়ে নিরুৎসাহিত করছেন।

ভোলার লালমোহনে শরীফুল নামের একজনের কথা হয় ভোলা প্রতিদিনের সঙ্গে। তেমন কোনো সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়াই তাকে দেখা গেল রাস্তায় মোটরসাইকেল ব্যবহার করছেন। তাকে জিজ্ঞাসা করে বাইরে বের হওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

তবে সাদেক হোসেন নামের চল্লিশোর্ধ্ব এক রিক্সাচালক বললেন, নিজের ও পরিবারের পেটের দায়ে বাইরে বের হতে হয়েছে। এছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই। ঘরে বসে থাকলে তো আর কেউ খাবার দেবে না। আর পেট তো করোনা বোঝে না। এরপরও আমাদের নির্যাতিত হতে হয়।

ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, দৌলতখান, লালমোহন, চরফ্যাশনসহ সব উপজেলায় বাজারঘাট ফাঁকা দেখা গেছে। তবে অনেক জায়গায় হাত ধোয়া ও নিয়ম মানা হচ্ছে না। নদীর পাড় এলাকায় হোসেন নামের একজন বললেন, আমরা গরীব মানুষ। এত সাবান পাবো কোথায় হাত ধোয়ার জন্য?

তবে এমন পরিস্থিতি পরিবর্তনের চেষ্টা করে যাচ্ছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সব উপজেলায় সতর্কতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

এরমধ্যে শুক্রবার বিকেল থেকে ইউএনও হাবিবুল হাসান রুমি ও থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবীরের নেতৃত্বে লালমোহন উপজেলা সদর, নাজিরপুর, দেবীর চর, গজারিয়া বাজার, কর্তার হাট, চৌমুহনী বাজার, রায় চাঁদ বাজার ও লর্ডহার্ডিঞ্জ বাজারে অভিযান চালিয়ে দোকান-পাট বন্ধ করে দেন। একই সাথে লোকজনকে নিরাপদে যার যার বাড়ীতে চলে যেতে বলা হয়।

লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি জানান, করোনাভাইরাস আজ সারা বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা নৌ-বাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাঠে কাজ করছি।

লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবীর জানান, সরকারের নির্দেশে আমরা প্রতিদিন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে লোকজনকে সচেতন করছি।

তবে অসচেতন মানুষ যেমন আছেন আবার বেশিরভাগক্ষেত্রেই সচেতনতাও লক্ষ্য করা গেছে।

অন্যদিকে ভোলা পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান শনিবার করোনায় লক ডাউনের কারনে পৌর এলাকার হতদরিদ্র ৩ হাজার পরিবারের মাঝে ২০ কেজি করে চাল, ৫ কেজি করে আলু এবং ১কেজি করে ডাল বিতরন করবেন।