কোন অপরাধকেই সমর্থন করতে নেই: এমপি শাওন

আব্দুর রহমান নোমান: ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের নিকট মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারাটাই বড় স্বার্থকতা। যেখানে কোন অপরাধই মুখ্য হিসেবে বিবেচিত এমনটাই নিজের ফেসবুক আইডিতে তুলে ধরেন এমপি শাওন। পাঠকের জন্য নিম্মে তা তুলে ধরা হলো।

দৃশ্যটা আমার নির্বাচনী এলাকার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নস্থ সাদাপোল এলাকায়। উক্ত এলাকা থেকে কে যেন হঠাৎ আমাকে ফোন করে বলল স্যার, আমাদের পাশের মুড়ির মিলের মালিকের কাছে কে যেন খাদ্য গুদামের সরকারী চাল বিক্রি করেছে। সেগুলো দিয়ে মিলের মালিক মুড়ি ভাজতেছে। দ্রুতই বাসা থেকে প্রস্থান করলাম চাল চোর ধরার প্রত্যাশা নিয়ে। যেতে যেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এডিশনাল এএসপি (সার্কেল), ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), খাদ্য অফিসার, পিআইও কে ফোনে বললাম দ্রুত স্পটে আসার জন্য। গাড়ী দ্রুত বেগে চলছে। খবরটি শুনে নিজের মনকে স্থির রাখতে পারলাম না।

নিজেকে নিয়ে খুবই ভাবান্বিত হয়ে পড়লাম। ভাবলাম, কর্মহীন ও দু:স্থ মানুষদের জন্য দিনরাত কত কষ্টই না করে যাচ্ছি। ফজরের নামাজ শেষ করেই বাসা থেকে বের হয়ে যাই সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্য নিয়ে। নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দিয়ে প্রতিটি মুহূর্তে পড়ে থাকি গরীব-দু:খী ও অসহায় মানুষের কল্যানে। পথে-ঘাটে-প্রান্তরে সারাদিন হেঁটে চলতে চলতে নিজের পাঁ দুটি কখনো ফুলে উঠে, সাধারণ মানুষের কল্যানে কাজ করতে গিয়ে কখনো কখনো প্রচন্ড গরম ও ক্ষুদার যন্ত্রনায় নিজের নি:শ্বাস বের হবার উপক্রম হয়। তবুও নিজের শরীরকে সামান্য বিশ্রাম দেই না।

প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টিও আমার ছুটে চলাকে স্থবির করতে পারেনি। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে হাঁটু সমান পানি দিয়ে হেঁটে হেঁটে ত্রান সহায়তা দিয়েছি। কারন, সাধারণ মানুষের কষ্টে নিজেকে খুবই বিষন্নতা ও হতাশাগ্রস্থ মনে হয়। পরের উপকারের মধ্যেই আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাই। মানবতার বাতি ঘর, ১৬ কোটি মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল, সফল রাষ্ট্রনায়ক, জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশক্রমে আমি এ অঞ্চলে এসেছি খেটে খাওয়া মানুষের কল্যান সাধনার ব্রত নিয়ে।

সুতরাং, বিশ্রাম আমার জন্য প্রযোজ্য নয়। যতদিন না আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি মানুষ স্বাবলম্বী হতে না পারে। আমি যেখানে আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি মানুষ কে নিয়ে ভাবি সেখানে কিছু অসাধু লোক সরকারী চাল চুরির মত জঘন্য কাজ করতে পারে? এরা কি মানুষ না পাষন্ড? এসব ভাবতে ভাবতেই মূল স্পটে চলে আসি। গাড়ী থেকে নেমে সকল অফিসারদের নিয়ে মুড়ির মিলে উপস্থিত হই। নিজ হাতে প্রতিটি চালের বস্তা খুলে দেখি সেগুলো সরকারী চাল নয়।

মূলত সরকারী চালের খালি বস্তায় মুড়ির চাল আমদানি করা হয়েছে। এটাও একটা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আমি প্রথমবারের মত মিলের মালিককে সতর্ক করে দিয়েছি। আমার কাছে প্রতিটি অপরাধই মূখ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। কোন অপরাধকেই সমর্থন করতে নেই। আমি বিশ্বাস করি, লালমোহন-তজুমদ্দিনে কোন অপরাধীর অভয়ারণ্য হতে পারে না। প্রতিটি বিষয়েই আমি যথেষ্ট সজাগ থাকি। আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ ভাল থাকলে সেটাই আমার প্রাপ্য।