ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড কি আওয়ামী লীগের জন্য বিব্রতকর?

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে ইতোমধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এ ঘটনায় পুলিশের আটক তালিকায় বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও রয়েছেন।

এমন প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগ বিষয়ে কী ভাবছে আওয়ামী লীগ? আর এ বিষয়টা তাদের জন্য কতোটা বিব্রতকর?

এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন: বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ ও তরুণ সমাজের মধ্যে অস্থিরতার মাত্রাটা অনেক বেশি। সেই অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশই এরকম মাঝে মাঝে দেখা যায়। এখন এটাও ভাববার সময় এসেছে যে দেশে এই ধরনের রাজনীতি কী আর সমর্থনযোগ্য কিনা।

তিনি বলেন: ছাত্র রাজনীতিতে যদি উৎকর্ষতা না আসে, যে ছাত্ররা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত তারা যদি শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ভাল বজায় রাখতে না পারে, বা তারা যদি ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করতে না পারে, তাদের সম্পর্কে মানুষের একটা নেতিবাচক ধারণা চলে আসবে।

শুধু আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড নয়, বরং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এই ধরনের আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে প্রকাশ্যে রাস্তায় বিশ্বজিৎ নামের এক দর্জি দোকানিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাও রয়েছে ছাত্রলীগের। যার জন্য তাদের কয়েকজনের সাজাও হয়েছে। তবে সেখানেও সঠিক বিচার এখনও হয়নি বলে বিশ্বজিতের পরিবারের অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নিজেদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে জেরে সংঘর্ষের বহু ঘটনা রয়েছে। ক’দিন আগেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা চাঁদা চেয়েছেন এমন অভিযোগ দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদককে অপসারণ করা হয়েছে।

ছাত্রলীগ-যুবলীগের যে নেতিবাচক ভাবমূর্তি এখন তৈরি হয়েছে, সেটি কি আওয়ামী লীগের রাজনীতির বড় ক্ষতি করছে?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী একটা সংগঠন হিসেবে ছিল। এই ছাত্রলীগের অনেক গৌরবউজ্জল অতীত আছে। স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় এই ছাত্রলীগের একটা উজ্জ্বল একটা অবস্থান ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে, ছাত্রলীগের কিছু কিছু কর্মকাণ্ড যেটা ছাত্রলীগকেই শুধু বিতর্কিত করছে না, এটা মুল সংগঠন আওয়ামী লীগকেও অনেক বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। এটি নিয়ে অবশ্যই আমাদের বিব্রত হতে হয়।

এই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেবে আওয়ামী লীগ?

হানিফ বলেন: পৃথিবীর যেকোনো দেশেই অপরাধকে দমন করার জন্য আইনের কঠোর প্রক্রিয়াকেই সবসময় অনুসরণ করা হয়। অবশ্যই এখানে আইনের কঠোর প্রক্রিয়া হবে।

তবে তিনি বলছেন: যারা উগ্র মানসিকতা সম্পন্ন, তাদেরকে সরিয়ে দেয়া বা তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া। এই পদ্ধতিতে আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে আমরা এই ধরনের বিব্রতকর অবস্থা থেকে আমরা হয়ত বের হয়ে আসতে পারবো।

হানিফের মতে: বিশেষ করে আমাদের টানা এগারো বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। যারা বেশিরভাগই সুযোগসুবিধা নেয়ার জন্যেই আসে। দল থেকে এই অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করে, তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।