বিএনপি আমলে উলঙ্গ নির্যাতন করেছিল এই জসিম: চেয়ারম্যান

আব্দুর রহমান নোমান: ভোলার লালমোহন উপজেলার ডাওরী বাজারে সন্তানের সামনে বাবাকে উলঙ্গ করে মারধর এর সেই ঘটনা মূলত ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের ক্ষমতা গ্রহণের ঠিক ১৫-২০ দিনের মাথায় একই ঘটনার প্রতিশোধ।

ভোলা প্রতিদিনকে এমনটাই বলেছেন ঘটনাস্থল কালমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আকতার হোসেন হাওলাদার।

চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বলেন: বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মেজর হাফিজের ক্যাডার ছিল জসিম। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণের ১৫-২০ দিনের মধ্যে এই জসিমরা হাসানের বাবা আবু ড্রাইভারকে শবে বরাতের রাতে মসজিদের ভেতর থেকে বের হওয়ার পর ঠিক একইভাবে মারধর করেছিল। আওয়ামী লীগের সমর্থন করাই ছিল তখন তার একমাত্র অপরাধ। আবু ড্রাইভারের সন্তানরাও তখন তাদের বাবাকে একইভাবে দেখেছিল।

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন: মারধরের শিকার জসিম একজন চিহ্নিত ডাকাত এবং বিএনপির ক্যাডার। শুধু সে নয়, তাদের পুরো পরিবারই ডাকাত। তাদের নির্যাতনে বিএনপি আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শান্তিতে থাকতে পারেনি। জসিমের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক ডাকাতি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। ডাকাতির মামলায় প্রশাসন তাদের একাধিকবার গ্রেপ্তারও করেছে।

তবে ডাকাতি ছাড়া অন্য কোনো কারণে জসিমের সন্তানদের সামনে তাকে এভাবে মারধর করে থাকলে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

গ্রেপ্তার হওয়া মারধরকারী হাসানের বাবাও এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। ২০০১ সালে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ করার কারণে এরকম উলঙ্গ নির্যাতনের শিকার সেই আবু ড্রাইভার বলেন: বিএনপি ক্ষমতায় আসার কয়েকদিন পর শবে বরাতের রাতে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর আমার সন্তানদের সামনে আমাকে মারধর করেছিল এই জসিম। তাদের মারধরে আমি উলঙ্গ হয়ে গেলেও তারা মারধর থামায়নি। শবে বরাতের রাতেও তারা আমাকে এভাবে মেরেছিল। আমার ছোট ছেলেও নামাজ পড়তে গিয়েছিল আমার সাথে। আমাকে এভাবে মারধর করতে দেখে সে কান্নাকাটি করায় তাকেও পিটিয়ে হাত ভেঙে দেয়া হয়েছিল। এর প্রতিশোধ নিতেই আমার ছেলে জসিমকে এভাবে মারধর করেছে।

ফেসবুকে সম্প্রতি সন্তানের সামনে বাবাকে উলঙ্গ করে মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, লালমোহনের ডাওরী বাজারে একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহার আলী বাড়ির মৃত আব্দুল মুন্নাফের ছেলে মোটরসাইকেল চালক জসিমকে শত শত মানুষ ও তার দুই মেয়ের সামনে নির্যাতন করা হচ্ছে।

লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবীর জানান, ভিডিওটি ২০১৮ সালের। মারধরকারী হাসানকে ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার করার পর এ ভিডিওটি নতুন করে ছাড়া হয়েছে। এ ঘটনা আমরা তখন জানতাম না। কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর জসিমের স্ত্রী এ ঘটনায় মামলা করেছেন। মারধরের শিকার ওই জসিমও ডাকাতিসহ একাধিক মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছে।