ভোলার মাটিতে খুনি মাজেদের দাফন হতে দেবো না: এমপি মুকুল

ভোলা প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গবন্ধুর খুনি ক্যাপ্টেন (অব.) মাজেদের ফাঁসির পর ভোলার বোরহানউদ্দিনের মাটিতে তার কবর দিতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখান) আসনের এমপি আলী আজম মুকুল।

খুনি মাজেদের মরদেহ তার জন্মস্থান বোরহানউদ্দিনে দাফনের জন্য ভোলায় পাঠানো হলে করোনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করে হলেও তা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন এই সংসদ সদস্য।

শনিবার ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে খুনি মাজেদের মরদেহের বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করেন আলী আজম মুকুল।

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি বলে, ‘‘বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বিনয়ের সহিত দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কুখ্যাত নরপিশাচ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি, ফাসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী ক্যাপ্টেন মাজেদকে গ্রেপ্তারের পর আমরা করোনা ভাইরাসের কারণে উল্লাস প্রকাশ করতে পারিনি।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক এই খুনির সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা বাতিলের মধ্যে দিয়ে তার ফাঁসির রায় কার্যকরে আর কোন বাধা নেই।

আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই- খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর তার মৃতদেহ যেন ভোলায় পাঠানো না হয়। যেহেতু এই খুনির গ্রামের বাাড়ি আমার নির্বাচনী এলাকায়, সেহেতু তার মরদেহ ভোলায় পাঠানো হলে করোনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করে হলেও আমি নিজে তা প্রতিহত করবো।

আমি বেঁচে থাকতে এই ভোলার মাটিতে ঘৃণ্য নরপশু মাজেদকে দাফন করতে দিব না।’’

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদের পৈতৃক বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার। তিনি একইসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনে কর্মহীন জেলেদের জন্য আসা ত্রাণের চাল চুরি করে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন এই চেয়ারম্যান। তাদের চাল চুরির সংবাদ করায় স্থানীয় এক সাংবাদিককে মারধরও করেছেন তারা।

এছাড়া আরও বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে- বঙ্গবন্ধুর এই খুনির নাতিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। তার দাদার কুকীর্তি জানার পর সেই কমিটি স্থগিত করা হলেও পরবর্তীতে প্রভাবশালীদের তৎপরতায় আবারও সেই কমিটি বহাল করা হয়েছিল।

ক্যাপ্টেন (অব.) মাজেদের নাতি বোরহানউদ্দিন উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সেই সাধারণ সম্পাদকের নাম মুজিব উল্যাহ পলাশ বিশ্বাস। তাদের পরিবারের এক নারীও সরকারি চাকরিজীবী। পরে স্থানীয়দের প্রতিবাদ ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

ক্যাপ্টেন অবসরপ্রাপ্ত আবদুল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত আরও পাঁচ খুনি বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা।