স্যার ফজলে হাসান আবেদের জানাজা-দাফন রোববার

ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ শুক্রবার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ডা. মুহাম্মাদ মুসা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুকালে স্যার ফজলে হাসান আবেদের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে এবং তিন নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।

গত ২৭ নভেম্বর এ্যাপোলো হাসপাতালে রেসপেরিটরি সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তিনি ডা. চন্দ্র প্রকাশ ডকুয়ালের তত্ত্বধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।

আগামী ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত তার মরদেহ রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে।

ওই দিন দুপুর সাড়ে বারোটায় আর্মি স্টেডিয়ামে তার নামাজে জানাজা সম্পন্ন হবে। জানাজার পর ঢাকার বনানী কবরস্থানে স্যার ফজলে হাসান আবেদকে দাফন করা হবে।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ বিশ্বের সর্ববৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘ব্র্যাক’-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল তদানীন্তন সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার বানিয়াচংয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। সৈয়দা সুফিয়া খাতুন এবং সিদ্দিক হাসানের দ্বিতীয় সন্তান তিনি।

ব্র্যাকের প্রথম চেয়ারপার্সন ছিলেন কবি বেগম সুফিয়া কামাল। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দীর্ঘ সময় ফজলে হাসান আবেদ ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন পদে ছিলেন।

চলতি বছরের আগস্টে ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারপার্সন পদ থেকে অবসর নেন। তবে প্রতিষ্ঠানের ‘চেয়ার এমেরিটাস’ হিসেবে ছিলেন তিনি।

১৯৭০ সালে ফজলে হাসান আবেদ বাংলাদেশের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত দুঃস্থ মানুষের সাহায্যে ত্রাণ কর্মকাণ্ডে জড়িত হন। মু‌ক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জা‌তিকভাবে কাজ করে ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরে আসেন।

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার কাজে অংশ নেন ফজলে হাসান আবেদ। ১৯৮০ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।

বর্তমানে ব্র্যাক বাংলাদেশের ৬৪টি জেলাসহ এশিয়া, আফ্রিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি দেশে তার কার্যক্রম চালিয়ে পৃ‌থিবীর সবচেয়ে বড় বেসরকা‌রি সংস্থায় পরিণত হয়েছে। ব্র্যাকের পরিষেবার আওতায় আছে ১২ কোটিরও বেশি মানুষ।