অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন ভোলার আওয়ামী লীগ নেতা বিপ্লব

তোফায়েল আহমেদের সন্তান হিসেবে গর্ব করতে গিয়ে পারিবারিক সূত্রের রাজনীতির প্রসঙ্গক্রমে কথা বলায় বাগেরহাটে ছবিতে জুতাপেটা ও ঝাড়ুপেটার শিকার হওয়ার পর এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি তোফায়েল আহমেদের ছেলে ও ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব।

ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় আমার বক্তব্যে একটি বিষয়ে বলতে গিয়ে সাবেক সফল পানিসম্পদ মন্ত্রী জাতীয় নেতা মরহুম আব্দুর রাজ্জাক কাকার সুযোগ্য সন্তান সংসদ সদস্য জনাব নাহিম রাজ্জাক ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের দৌহিত্র ও সংসদ সদস্য শ্রদ্ধেয় শেখ হেলাল মহোদয়ের সুযোগ্য সন্তান সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় মহোদয়ের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছিলাম- তারা কিভাবে এমপি হলেন মানে মূল্যায়ন কী ছিল। বুঝাতে চেয়েছি তারা দুজনই রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান আর রাজনীতিবিদের ঘরে রাজনীতিবিদের জন্ম হয়। তাদের রাজনীতির হাতেখড়ি পরিবার থেকে হয়। তাদের পরিবার যতদিন দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে জেলজুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন সেই কষ্ট তার পরিবারের সকল সদস্য ভোগ করেছেন। শেখ তন্ময় ভাইয়ের শ্রদ্ধেয় দাদা ১৫ আগস্টে জাতির পিতার পরিবারে সদস্যদের সাথে শহীদ হয়েছিলেন, দেশের জন্য জীবন দিয়েছিলেন। আমার বলার উদ্দেশ্য ছিল এই দুই পরিবার তাদের সন্তানদেরকে এমনভাবে প্রস্তুত করেছেন যে দলের প্রয়োজনে দেশের প্রয়োজনে তারা যেকোন দায়িত্ব নেয়ার জন্য উপযুক্ত। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী আজ তাদের পরিবারকে ও যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করেছেন। আজ তারা নিজগুণে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন।

কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় কিছু ব্যক্তি আমার বক্তব্যের ভুল বিশ্লেষণ করে একটি বিভেদ তৈরি করার ষড়যন্ত্র করছেন।
আমার দুইজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বকে মূল্যায়ন করা ও বড় করাই ছিল আমার মূল উদ্দেশ্য। আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হয়ে আমি কখনোই আমার দলের গর্ব আমার পছন্দের দুইজন সংসদ সদস্যকে হেয় করার দুঃসাহস দেখাতে পারি না। তারপরেও আমার বক্তব্যে যদি কারো মনে আঘাত লেগে থাকে তার জন্য আমি দুঃখিত।
আশা করি আমার এই বক্তব্যের পর সকল ভুলবোঝার অবসান হবে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
জয় হোক জননেত্রী শেখ হাসিনার।’’

এছাড়া রোববার সন্ধ্যার দিকে ফেসবুকে আরও একটি দিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন বিপ্লব। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সাবেক সফল পানিসম্পদ মন্ত্রী জাতীয় নেতা মরহুম আব্দুর রাজ্জাক কাকার সুযোগ্য সন্তান সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ও সংসদ সদস্য শ্রদ্ধেয় শেখ হেলাল মহোদয়ের সুযোগ্য সন্তান সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় মহোদয়, আপনারা দুজন সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় সংসদ সদস্য। আপনারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের অন্যতম কারিগর। আপনারা আপনাদের নির্বাচনী এলাকার দলমত ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলের নয়নের মনি ও শ্রদ্ধার পাত্র। শুধু আপনাদের নয় এই দুজন মাননীয় সাংসদ আমারও ভাই এবং অত্যন্ত পছন্দের এবং কোন অবস্থাতেই আমার কোন বক্তব্যে তাদের অসম্মান হবে এটা আমার জন্য মেনে নেয়াও অনেক বেদনাদায়ক। আমি আমার বক্তব্যে আপনাদের শুধু সম্মানিত করতে চেয়েছি। আবারও বলছি আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখার কারণে আপনাদের সকলের মনে যে আঘাত লেগেছে তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’’

এর আগে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেখ তন্ময়ের অনুসারী এবং বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মইনুল হোসেন বিপ্লবের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে সেই ছবিতে জুতা ও ঝাড়ুপেটা করছেন। এসময় তাদেরকে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেও দেখা যায়।

বাগেরহাট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এমন ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক বলে মনে করছেন ভোলা জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, এখানে মইনুল হোসেন বিপ্লব শেখ তন্ময়কে অসম্মান বা অপমান করে কথা বলেননি। বরং প্রসঙ্গক্রমে বিষয়টি বলেছেন। এজন্য তোফায়েল আহমেদের সন্তানের ছবিতে জুতাপেটা করা সমীচিন নয়। এটা অতি উৎসাহীরা করে থাকতে পারে।