এমপি বদির মেয়ের বিয়েতে শতাধিক রোহিঙ্গা

কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক আলোচিত সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ও একই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে সামিয়া রহমান সানির বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার কোম্পানী বাড়িতে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এ বিয়েতে বয়-বেয়ারার কাজ করেছে শতাধিক রোহিঙ্গা।

জানা যায়, এ আয়োজনে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষকে আপ্যায়ন করা হয়। তাদের মধ্যেও ছিলো অনেক পুরনো রোহিঙ্গা। শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে অতিথি আপ্যায়ন। এর মধ্যে জুমার নামাজের জন্য বিরতি দেয়া হয়। খাবারের প্যান্ডেল করা হয় ৫টি। প্রতি ব্যাচে প্রায় এক হাজার মানুষকে খাওয়ানো হয়। পুরো আয়োজনকে সিসি ক্যামরার আওতায় আনা হয়।

এটি ছিলো সাম্প্রতিক সময়ে টেকনাফের সবচেয়ে আলোচিত বিয়ে। বিয়েকে সামনে রেখে সপ্তাহ ধরে চলে প্রস্তুতি। ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে সাজসজ্জার সরঞ্জামাদি আনা হয়। আয়োজনের পুরোটা তদারকি করেন সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি।

টেকনাফের ইতিহাসে এমন রাজকীয় বিয়ে আর দেখেনি বলে স্থানীয় আব্দু রহমান ও আবুল কালাম জানান। মূল ফটক থেকে বর-কনের মঞ্চ, খাবারের প্যান্ডেল পর্যন্ত কারুকাজ। প্রধান গেইট থেকে পুরো বিশাল এলাকা জুড়ে বর্ণিল, চোখ ধাঁধানো আলোর ঝলকানি ছিলো।

একজন ডেকোরেশন কর্মী জানিয়েছেন, খাবার বাদ দিলে শুধু সাজসজ্জাতেই ব্যয় হয়েছে কোটি টাকার উপরে। স্থানীয় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বয় বেয়ারা হিসেবে শতাধিক যুবককে আনা হয়। তাদের ড্রেস পড়িয়ে খাবারের কাজ সম্পন্ন করা হয় বলে স্থানীয়রা।

সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ব্যক্তিগত সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন জানান, পাত্র নেত্রকোনা জেলার জয়নগরের ঐতিহ্যবাহী পরিবারের মনোয়ারা ম্যানশনের সুরত আলী ও বেগম মনোয়ারা আক্তারের পুত্র ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীন। এমপি কন্যা সামিয়া রহমান সানির সঙ্গে ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীনের প্রায় ৯ মাস আগে আক্দ সমপন্ন হয়।

সামিয়া রহমান সানি বর্তমানে ঢাকার লন্ডন ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজে অনার্স তৃতীয় সেমিস্টারে পড়ছেন।

অন্যদিকে আবদুর রহমান বদি একমাত্র মেয়ের বিয়ে নিয়েও রাজনীতি করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, বদি মেয়ের বিয়ে নিয়ে ও সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি কেবল তার অনুসারী হিসেবে পরিচিতদের মেয়ের বিয়েতে দাওয়াত দিয়েছেন।

উখিয়া উপজেলা যুবলীগ পাল্টা আয়োজন হিসেবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভোজের অয়োজন করে একই দিন। নেতাকর্মীরা চাঁদা তুলে এ আয়োজন করেছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন।

সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন।