কেউ প্রকাশ্যে খুন হলেও এগিয়ে না আসার মানসিকতা কেন?

দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বরগুনায় এমন একটি কাণ্ড ঘটে গেছে, যা রীতিমত অবাক করার বিষয়। সেখানে প্রেম সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে প্রকাশ্য দিবালোকে রিফাত শরীফ নামের ২২ বছর বয়সী এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে যা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একাধিক তরুণ এক যুবককে এলোপাথারি কুপিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে থাকা অন্যান্য মানুষ কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসছে না।

ভোলা প্রতিদিন ডটকমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, বরগুনা সরকারি কলেজ’র সামনে রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে যখম করে কয়েকজন যুবক। আহত অবস্থায় তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে রিফাতের মৃত্যু হয়।

নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ জানান, দুইমাস আগে রিফাত বরগুনার পুলিশ লাইন এলাকার কিশোরের মেয়ে আয়শা আক্তার মিন্নিকে বিয়ে করে। নিজের সাবেক স্ত্রী দাবি করে পশ্চিম কলেজ সড়কের নয়ন নামের এক যুবক মিন্নিকে উত্যক্ত করতে শুরু করে এবং ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোষ্ট করে।

তিনি বলেন, এ নিয়ে রিফাতের সাথে নয়নের বিরোধিতার সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে সকালে নয়ন, রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী ও রাব্বি আকন রিফাতকে চাপাতি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে যখম করে ফেলে রেখে যায়।

ভিডিও ফুটেজে হত্যার নৃশংসতা দেখে পুরান ঢাকার বিশ্বজিত হত্যার কথা আমাদের স্মরণ হয়। বিশেষ করে এই দুই হত্যাকাণ্ডের ধরণ বলতে গেলে একই। এসব হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের পৈশাচিক কাণ্ড আমাদের দেখতে হবে, যা কখনোই কাম্য নয়।

বরগুনা থানার অফিসার ইনচার্জ আবির মাহমুদ হোসেনের বক্তব্যে আমরা আস্থা রাখতে চাই। তিনি বলেছেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আসামী শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমরা আশা করি হত্যাকারীরা শিগগিরই পুলিশের জালে আটকা পড়বে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে আমরা সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাচ্ছি।